ঢাকা: হবিগঞ্জের লাখাইয়ে হাওরে নববধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত মিঠু মিয়া (২১) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।এ ঘটনায় গ্রেপ্তার অপর দুই আসামি সোলায়মান রণি ও শুভ মিয়ার পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে ৩ আসামিকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মিঠু উপজেলার মোড়াকড়ি গ্রামের ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে। গত ২৫ আগস্ট স্বামীর সঙ্গে নৌকা ভ্রমণ করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক নববধূ। এ সময় নির্যাতিতার স্বামী ও তার বন্ধুকে মারপিট করে আহত করে দুর্বৃত্তরা। তাদের মোবাইলে ধারণ করা হয় অশ্লীল ভিডিও। হুমকি দেওয়া হয় এসব ঘটনা কাউকে জানালে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হবে। ওই দিন দুপুরে উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে এ লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও পুলিশ। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৮ জনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন নির্যাতিতার স্বামী। বিকেলে আদালতের নির্দেশে লাখাই থানায় মামলাটি এফআইআরভুক্ত করা হয়। লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার মিঠু মিয়া আগে পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। শুক্রবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধান আদালতে ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পুলিশ ও নির্যাতিতার পরিবার জানায়, এক মাস আগে লাখাই উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের এ যুবকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই গ্রামের ওই মেয়েটির। বিয়ের পরপরই স্বামী চলে যান ঢাকায়। সম্প্রতি স্বামী বাড়িতে আসেন। গত ২৫ আগস্ট সকালে তিনি তার স্ত্রী ও বন্ধুকে নিয়ে হাওরে নৌকা ভ্রমণে যান। ভ্রমণের একপর্যায়ে দুপুরে একই গ্রামের মুছা, সুজাত, হৃদয়, ইব্রাহিম ও জুয়েলসহ ৭/৮ জন যুবক নৌকাযোগে এসে তাদের গতিরোধ করে। পরে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই নির্যাতিতার স্বামী ও তার বন্ধুকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা নববধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় ঘটনার একটি ভিডিও ধারণ করে তারা। এ ঘটনা কাউকে জানালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।