সন্তান পড়াশোনায় অমনোযোগী হলে কার না মন খারাপ হয়? কিন্তু মন খারাপে তো আর সমস্যা দূর হবে না। বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির যুগে বাচ্চারা মোবাইল, ল্যাপটপ গেইমস ইত্যাদি নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে। গেইমের একেকটা লেভেল পার হওয়ার তুলনায় তাদের কাছে বই পড়া, মুখস্ত করা ইত্যাদি একেবারেই পানশে লাগে।অন্যদিকে, মন পড়ে থাকলে পড়ায় মনোযোগ ধরে রাখা যায় না। তাছাড়া একটানা বসে পড়তেও ভালো লাগে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে বাবা-মা হিসেবে আমরা সন্তানদের পড়ায় মনোযোগী করে তুলতে কিছু সাহায্য করতে পারি। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কীভাবে তাদের পড়ায় আরো মনোযোগী করে তোলা যায়:
# আনন্দময় করে: শিশুরা আনন্দ চায়। পড়াশোনাও যদি আনন্দময় হয়ে ওঠে তবে তা করতে আগ্রহী হবে আপনার সন্তান। এ কাজটি করার সময় আপনার আচরণই আসল ভূমিকা পালন করে। লেখাপড়া মজাদারভাবে উপস্থাপন করুন।
# সঠিক উপায় বেছে নিন: বেশিরভাগ সময় বাচ্চারা মনে করে, লেখাপড়া অন্যান্য ব্যস্ত কাজের মতোই একটি কষ্টকর কাজ। তারা তো বুঝবে না যে, তাদের বড় হয়ে বড় কিছু হতে হলে পড়তে হবে। তাই আপনি যদি শিক্ষা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে লেকচার শুরু করেন, তবে তারা একে আরো বিরক্তিকর মনে করবে। তাদের জিজ্ঞাসা করুন, তাদের কী করতে ভালো লাগে? যা ভালো লাগে তার সঙ্গে লেখাপড়াকে যোগ করে বোঝানোর চেষ্টা করুন। মন দিয়ে খেলার চলে বুঝানোর চেষ্টা করুন।
# পুরস্কার: পড়ার জন্য ছোটদের পুরস্কৃত করুন। পড়লে দুটো চকলেট দিন অথবা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পড়লে ৫ মিনিট খেলার সুযোগ দিন আর এসবের লোভে এমনিতেই ঝটপট পড়ার কাজটা সারবে।
# টাইম ঠিক করুন: প্রতিদিনের নির্দিষ্ট কাজের জন্য আপনার সন্তানকে নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি রাতে হোম ওয়ার্কের জন্য শিশুদের ৪৫ মিনিট সময়ই যথেষ্ট । তাই একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দিয়ে বলুন এই সময়ের আগে পরতে হবে বা ঘড়িতে অ্যালার্ম দিন দিয়ে বলুন, এটা বেজে ওঠার আগে পড়তে হবে। শিশুরা আগ্রহী হয়ে পড়বে।
# প্রশংসা করুন: ছোট বা বড় যে কাজই করুক না কেনো, শিশুটিকে উৎসাহ দিন। শিশুরা প্রশংসা বা উৎসাহ পেতে দারুণ ভালোবাসে। কাজেই পড়াশোনার কারণে যদি এই প্রশংসা পাওয়া যায়, তবে তা করতে পিছপা হয় না তারা।
# নিজেও পড়ুন: শিশুদের পড়াতে গেলে দেখা যায়, তাদের পড়ে পড়ে পড়ানো হচ্ছে। তা না করে, নিজে বরং অন্যকিছু পড়ুন। আপনার পড়া দেখে শিশুটিও তার পড়া পড়তে উৎসাহ বোধ করবে। আর তার নিজের পড়াটা নিজের করাই উত্তম।