মানসিক অসুস্থতা

মানসিক অসুস্থতা,মানসিক রোগের নির্দিষ্ট উপসর্গ বা লক্ষণ

মানসিক আসুস্থতা যে কোনো বয়েসে যে কোনো মানুষের হতে পারে। এমনকি বর্তমানে শিশুদের মধ্যেও এই অসুস্থতা বর্তমানে বিরল নয়। মানসিক অসুস্থতা নির্ণয় করা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অন্যতম জটিল পদ্ধতিগুলোর অন্যতম। কারণ কোনো একটি নির্দিষ্ট উপসর্গ বা লক্ষণ দিয়ে কোনো এক ধরণের অসুখ নির্ণয় করা যায়না। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার সাহায্যে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে এই অসুস্থতা সহজে লক্ষণীয় হয়। অন্তত পক্ষে অসুস্থ ব্যক্তির পরিবারবর্গ প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু লক্ষণ দেখে বুঝতে পারেন যে তা মানসিক অসুস্থতাকে নির্দেশ করছে।বিভিন্ন মানসিক রোগের পেছনে মূল কারণ থাকে পরিস্থিতিগত চাপ, জেনেটিক ফ্যাক্টর, জৈব রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্যহীনতা অথবা এর সবগুলোই। খুব সাধারণ ও পরিচিত কিছু মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে উদ্বিগ্নতা, বিষণ্ণতা, ডিমেনশিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, স্কিৎজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি।

মানসিক অসুস্থতা

এসবের লক্ষণ হিসেবে মেজাজ, ব্যক্তিত্ব, অভ্যাস ও সামাজিক ব্যবহারের পরিবর্তন বা তারতম্য। যেকোনো মানসিক অসুস্থতা মোকাবেলা করতে হলে আগে দরকার সমস্যার স্বীকৃতি দেয়া। তারও আগে প্রয়োজন সমস্যার লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা। বলা হয়, “মনে আঘাত লাগলে শরীরও কাঁদে”। যখন মনে কোনো অস্থির অবস্থার উৎপত্তি হয়, তখন তার বিভিন্ন শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ পায়।

মানসিক রোগের নির্দিষ্ট উপসর্গ বা রোগের লক্ষন সমূহ:

  • দিনের বেশিরভাগ সময়ে দুঃখ বোধ করা।
  • দৈনন্দিন কাজ করতে অনীহা। কোনো কাজই ঠিক ভাবে না করতে পারা।
  • মনসংযোগের অভাব।পড়তে, লিখতে বা অন্য কিছু কাজের ক্ষেত্রে মনোযোগের অভাব।
  • অনর্থক, অবাস্তব ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা।
  • যে কোনও বিষয়ে অতিরিক্ত অবাস্তব ভয় বা দুর্ভাবনা করা।
  • ঘন ঘন অতিরিক্ত ও অযৌক্তিক মেজাজের পরিবর্তন।
  • সামাজিক দুরত্ব তৈরি করা। পরিবার, আত্মীয় ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগে অনীহা।
  • অস্বাভাবিক মাত্রায় ক্লান্তি বোধ করা, অসুস্থ বোধ করা।
  • বাস্তবকে অস্বীকার করার প্রবণতা। হ্যালুশিনেট করা বা ডিল্যুশন হওয়া।
  • দৈনন্দিন সমস্যার মোকাবিলায় পিছু হঠার প্রবণতা, সমস্যাকে উপেক্ষা করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।
  • বাস্তব পরিস্থিতি না বুঝতে পারা।
  • চঞ্চলতা, প্রলাপ বকা ও আক্রমনাতক আচরণ প্রভৃতি উপসর্গসহ জিনিসপত্রের ক্ষতিসাধন বা ভাঙচুর করা।
  • খাবার গ্রহনে অনীহা। বা অতিরিক্ত খাবার গ্রহন করা।
  • অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা ওজন হ্রাস পাওয়া।
  • শরীরে ব্যাথা বোধ করা। যেমন মাথা ব্যাথা, হাতে পায়ে ব্যাথা প্রভৃতি।
  • যৌন আক্ষাঙ্খা হ্রাস বা বৃদ্ধি পাওয়া।
  • অনীদ্রা বা অতিরিক্ত নিদ্রার প্রবণতা।
  • মাদক গ্রহনের আকর্ষণ বৃদ্ধ পাওয়া।
  • আত্মহত্যার প্রবণতা । বা নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা।

তাই বাড়ির কনিষ্ঠ থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যের প্রতি প্রত্যেকের মানসিক অসুস্থতার বিষয়ে নজর দেওয়া একান্ত দরকার। যদি কখনো কেউ নিজের স্বাভাবিক ব্যবহারের পরিবর্তন করেন এবং তার নেপথ্যে কোনো সঠিক কারণ খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই মানসিক বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে দেরী করা উচিত নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *