বিট লবণ: বিট লবণ সাধারণত এই খনিজ লবণটি হিমালয় এর আশপাশের লবণসমৃদ্ধ মাটির নিচ থেকে পাথর আকারে উত্তোলন করা হয়। মশলা হিসেবে ব্যবহৃত এই বস্তুটিতে অন্যান্য বিভিন্ন উপাদানের সাথে মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড আছে, যার থেকে এর রঙ এসেছে। বিট লবণ বা বিট নুন এক প্রকারের চুল্লীতে শুষ্ক ভাজা খনিজ লবন । গন্ধটি মূলত এর সালফার উপাদানগুলির কারণে হয়। এই খনিজের মধ্যে গ্রেগাইটের উপস্থিতির কারণে (Fe3S4, ফেরাস (II,III) সালফাইড), গোটা অবস্থায় এটির রং বাদামী গোলাপী থেকে গাঢ় বেগুনী স্বচ্ছ স্ফটিকের মত থাকে। যখন গুঁড়িয়ে ধুলার মত করা হয়, এর রঙ বেগুনি থেকে গোলাপী পর্যন্ত হয়। বিট লবণ মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং অল্প সোডিয়াম সালফেট, সোডিয়াম বাইসালফেট, সোডিয়াম বিসালফাইট, সোডিয়াম সালফাইড, আয়রন সালফাইড এবং হাইড্রোজেন সালফাইডের অপদ্রব্য দিয়ে তৈরি।
যদিও প্রাকৃতিক লবণে প্রয়োজনীয় মিশ্রণগুলি দিয়ে বিট নুন উৎপাদন করা যায়, এটি এখন সাধারণত কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়। সাধারণত সোডিয়াম ক্লোরাইডে কম পরিমাণে সোডিয়াম সালফেট, সোডিয়াম বাইসালফেট এবং ফেরিক সালফেট মিশ্রিত করে এটি করা হয়। এরপর এটিকে চুল্লিতে কাঠকয়লা দিয়ে রাসায়নিকভাবে বিজারিত করা হয়। সোডিয়াম ক্লোরাইড, ৫-১০% সোডিয়াম কার্বোনেট, সোডিয়াম সালফেট এবং কিছু চিনির বিজারিত তাপীয় পদ্ধতির মাধ্যমে অনুরূপ পণ্য তৈরি করা সম্ভব।
বিট বা কালো লবণের উপকারিতা : অনেকেই আছেন অনাকাঙ্ক্ষিত বেড়ে যাওয়া ওজন কমাতে চান। তাদের জন্য এই লবণ খুব সহায়ক। এই লবণে উপস্থিত খনিজগুলো অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে থাকে। ফলে শরীরে উপস্থিত বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া দূর হয়। এছাড়াও এ লবণে সোডিয়ামের উপাদান বেশি রয়েছে। তাই শরীর সতেজ ও চাঙা রাখতে বিট লবণ অনেক উপকারী। শরীরের কোষে পুষ্টি সরবরাহ, হজমজনিত সমস্যা , এমনকি স্থূলতা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে থাকে বিট লবণ। পুষ্টি এবং খনিজ সমৃদ্ধ হওয়ায় নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরের হাড় অনেক মজবুত থাকে। যারা সুগারের রোগী তাদের বিট লবণ খাওয়া উচিত কারণ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে বিট লবণ।
অ্যাসিডিটি কমায়
বিট লবণ লিভারে পিত্ত উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এবং অ্যাসিডিটি ও ফোলাভাব নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। বিট লবণ গ্যাসের সমস্যা থেকে দূরে রাখে ও পেট ফাঁপা কমায়।
হজমে সহায়তা
যদি আপনার হজমের সমস্যা থাকে, তাহলে বিট লবণ খেতে পারেন। বিট লবণ হজমপ্রক্রিয়ার উন্নতি করে।
রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা
বিট লবণ শরীরে রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত করে। এ ছাড়া রক্ত জমাট বাঁধা ও কোলেস্টেরলের সমস্যা হ্রাস করে।
চুলের যত্নে
বিট লবণে থাকা মিনারেলস চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া চুল পড়া কমায়। খুশকি রোধেও সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে
ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী বিট লবণ। এর মধ্যে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।