আমাদের যুবসমাজ আজ বিভ্রান্ত কিন্তু কেন, আসুন জেনে নিই

দেওয়ান মশিউর রেজা চৌধুরীলেখাপড়া, কর্ম, সামাজিক স্থর, ক্ষমতা না কি টাকা? কোনটি বেচে নেবে? না লটারি করে বেঁচে নেবে? না কি লাগ ভেলকি লাগ বলে ছেড়ে দিবে গন্তব্যহীন রাস্তায়? আমাদের যুবসমাজ আজ বিভ্রান্ত! আমার এই কথা গুলো পড়ে অনেকেই অনেক মন্তব্য ছুড়ে দিতে পারেন! মন্তব্য ছুড়ে দেবার আগে আসুন, একটু ঘুরে আসি যুবসমাজের সাথে জানতে চেষ্টা করি তাদের না বলা যন্ত্রণার কথাগুলো। এবার ছুড়ে দেন আপনার মন্তব্য, শুনি একটু। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বপ্ন সফলের চেয়ে স্বপ্ন মৃত্যুর সংখ্যাই বেশি! ভালোবাসা অর্জনের চেয়ে দেহ অর্জনের সংখ্যাই অনেক বেশি! মাফ করবেন ভুল বলে থাকলে।

আমাদের যুবসমাজ

ব্যাখ্যাটায় একটু পরেই যাচ্ছি ! প্রথম বেঞ্চে বসা মেধাবী ছাত্রের লেখাপড়ার ছাপে চশমাটা আজ একটু ভারী হয়ে গেছে, কিন্তু সফলতা একে বাড়েই কম। আর শেষ বেঞ্চে বসে থাকা লেখাপড়া ছেড়ে দেয়া ছাত্রের সফলতা আজ অনেক এগিয়ে, তবে এখানে একটি শব্দ জড়িয়ে আছে আর সেটা হচ্ছে “কিন্তু”। প্রথম বেঞ্চে বসা মেধাবী ছাত্রের চোখে এবং ভাবনায় ছিল “শিক্ষকের মর্যাদা”র গল্প আর শেষ বেঞ্চে বসে থাকা ছাত্রের চোখে ছিল তার দেখা বাস্তবতা ” শিক্ষক চেয়ার থেকে উঠে গম চোর, আটা চোর, মানুষকে মেরে খাওয়া চেয়াম্যানকে চেয়ারে বসাতে”। আমার দেখা, সমাজের কোন পরিবর্তন নয়, হয়েছে নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের  পরিবর্তন।

বলেছিলাম ব্যাখ্যাটায় একটু পরেই যাচ্ছি ! তাই অল্পতেই সেরে নিতে যাচ্ছি ব্যাখ্যাটা, বর্তমান প্রেক্ষাপট বলেন আর পরিস্থিতি বলেন দেখেই বুঝতে পারছেন। আমার লেখা “স্বপ্ন সফলের চেয়ে স্বপ্ন মৃত্যুর সংখ্যাই বেশি! ভালোবাসা অর্জনের চেয়ে দেহ অর্জনের সংখ্যাই অনেক বেশি”! এই কথা গুলো কতটুকু সত্য। পছন ধরেছে আমাদের নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের। দাড়িয়ে আছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ আর চেয়ারে বসে বিচার করছে ২০ বছরের দাপটে ছাত্র নেতা। তাহলে বলুন, সমাজের পরিবর্তন এসেছে না কি নৈতিকতা ও মনুষ্যতের পরিবর্তন? তাই বলি আসুন আগে আমরা আমাদের নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের প্রতি যত্নবান হই। আসুন, যোগ্য মানুষকে যোগ্য আসনে বসাতে শিখি। আসুন আগে সম্মান দিতে শিখি ।

আসুন আমরা আমাদের দেশের ইতিহাস-ঐতিয্যেকে লালন করি। আমাদের রয়েছে বয়স অনুযায়ী ভাষাগত কিছু মাধুর্যতা , আচরণগত সৌন্দর্যতা যা থেকেই তৈরি হয় নৈতিকতা, মনুষ্যত্ব, মানবিকতা ও আন্তরিকতা আর তাতেই জাগ্রত ও সচল এবং ন্যায়পরায়ণে চলে মানুষের বিবেক। আর যেখানে জাগ্রত ও সচল বিবেক থাকে সেখানে কখনোই নৈতিকতা, মনুষ্যত্ব, মানবিকতাসহ ইত্যাদির পচন ধরতে পারেনা। অনেকেই বলবেন, ডিজিটাল যুগে এসে এনালগ যুগের কথা বলছি, আমি বোধয় বড্ড সেখালেরই রয়ে গেছি। আমার কাছে হাই হ্যালো যুগটাই হল কমার্শিয়াল। আর দিন দিন এই কমার্শিয়াল চিন্তা ভাবনা আমাদেরকে গ্রাস করে পেলছে। আর সে কারনেই নৈতিকতা, মনুষ্যত্ব, মানবিকতাসহ ইত্যাদিতে পচন ধরতে শুরু করেছে।

আর সেই কারনেই আমাদের যুবসমাজ আজ বিভ্রান্ত হচ্ছে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না, বুঝে উঠতে পারছে না সে কি করবে, লেখাপড়া, কর্ম, সামাজিক স্থর, ক্ষমতা না কি টাকা? কিন্তু আমরা নিজেদের দায় এড়িয়ে, নিজেদের সংস্কৃতি কে ভুলে গিয়ে  অপসংস্কৃতি বলে নিজেদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছি, তাই আমি মনে করি নিজেদের ভুল গুলো স্বীকার করে, আমাদের যুবসমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করার দায়িত্ব সম্মিলিত ভাবে নেওয়া উচিৎ।

যুবসমাজ

পরিবার, সমাজ, রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্র। তবে দায়িত্বটা একটু বেশীই নিতে হবে রাষ্ট্রকে। মনে রাখতে হবে যে রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকেন সেই রাজনৈতিক দলের দায়বদ্ধতা সবচেয়ে বেশী। তাই আসুন নিজেদের মানুষিকতা পরিবর্তন করে দেশ ও আমাদের আগামী প্রজন্মের স্বার্থে দল মত নির্বিশেষে মানবিক দায়িত্ব নিয়েআমাদের যুবসমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে সম্মিলিত ভাবে কাজ করি। মনে রাখবেন, আমাদের আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে, সঠিক ভাবে পরিচালিত না করতে পারলে তার খেসারত সমগ্র জাতিকেই দিতে হবে।  আসুন, সমাজ, সামাজিকতায় ভালোবাসার বীজ রোপণ করি, সুন্দর সমাজ গড়ি।

লেখক :  দেওয়ান মশিউর রেজা চৌধুরী রিপন ( সংক্ষেপে : ডিএম রেজা চৌধুরী রিপন) 

কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক, মঞ্চ অভিনেতা, খেলোয়াড়, সংগঠক ও শিক্ষা অনুরাগী ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *